উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবে ব্যাংক অর্থ সংগ্রহ করতে পারছে না
সরকারের কার্যক্রম নিয়ে এরই মধ্যে নানামুখী আলোচনা হয়েছে। তাতে সরকারের কিছু ভালো দিক যেমন আলোচনা হচ্ছে, তেমনি কিছু সমালোচনাও হচ্ছে। বর্তমান সরকারের জন্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। এগুলো সমাধানের জন্য সরকার নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যেগুলো থেকে খুব স্বল্প সময়ে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব নয়। তবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অর্জনগুলোর মধ্য এক্সচেঞ্জ রেটের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা, রিজার্ভ বৃদ্ধি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা, প্রশাসনে পরিবর্তন উল্লেখ করার মতো। এগুলোর ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা যায়। এ মুহূর্তে দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে জটিল চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি। উচ্চ মূল্যস্ফীতি অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে সৃষ্টি হয়নি।
২০২২ সাল থেকেই অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। করোনাকালীন সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা সৃষ্টি হয়। পরে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিতেও এক পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিকবার পলিসি রেট বৃদ্ধিকরণসহ আরও নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ফলে তাদের উচ্চ মূল্যস্ফীতি ক্রমেই হ্রাস পেতে পেতে বর্তমানে সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে; কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সৃষ্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতি কোনোভাবেই কমছে না। বাজারে গেলে বিভিন্ন পণ্যের মূল্য প্রত্যক্ষ করলে বোঝা যায় মূল্যস্ফীতি কোন পর্যায়ে রয়েছে। আগের সরকার আমলে মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির বিভিন্ন নেতিবাচক পরিসংখ্যান কমিয়ে দেখানোর একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। অর্থনীতিবিদরা এ নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা বললেও পরিসংখ্যানগত বিভ্রান্তি নিরসনে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরের প্রকৃত অবস্থা জনগণকে জানানোর চেষ্টা করছেন। এ লক্ষ্যে বর্তমান মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান বাস্তবসম্মত বলে ধরে নেয়া যায়। গত অক্টোবর মাসের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যমতে, অক্টোবর মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অর্থাৎ খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৩ শতাংশের কাছাকাছি এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশের দিকে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এটা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর মূল্যস্ফীতি হ্রাস পায়নি বরং ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর দায়িত্ব গ্রহণের পর উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। এ জন্য বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মূল্যস্ফীতি গ্রহণযোগ্য মাত্রায় চলে আসার জন্য বেশ কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এরই মধ্যে বলেছেন, অর্থনীতিতে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হবে। তার এই বক্তব্যে যুক্তি আছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি হঠাৎ করেই সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। তিনি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেছেন, কোনো কোনো দেশ ৬ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পেরেছে, কোনো ক্ষেত্রে এর পরিমাণ আরও বেশি। আমরা হয়তো এ বছরের মধ্যেই মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমিয়ে আনতে পারব।
গত প্রায় ৩ মাস ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সব শ্রেণি-পেশার মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিপর্যস্ত হয়েছে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ এবং স্বল্প আয় ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। আর উদ্যোক্তা শ্রেণির মধ্যে যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, তারাও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়-শিল্প পরিচালনার জন্য তুলনামূলক কম অর্থ প্রয়োজন হয়; কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশি সুদ দিতে হয়। কারণ তারা প্রায়ই ব্যাংকিং সেক্টর থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ পান না। তাই বিভিন্ন এনজিওর কাছে থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হয়। এনজিওদের ঋণের সুদের হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আর্থিক সামর্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায়; কিন্তু উৎপাদিত পণ্য উপযুক্ত মূল্যে বিক্রি করতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলার কারণে তারা অনেকেই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না।
অনেকেই ব্যবসায় বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গৃহীত ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ঋণখেলাপি হয়ে যাচ্ছেন। অতীতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টর সম্পর্কিত যে সব তথ্য-পরিসংখ্যান প্রকাশ করত, তার বাস্তবতা নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিসংখ্যান গত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। ফলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বর্তমানে যে পরিসংখ্যান বা তথ্য প্রকাশ করছে, তা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা যেতে পারে। সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজতর হয়।
অর্থনীতির আরও কিছু বিষয় আছে, যেগুলো দ্রুত সমাধান করা দরকার। সরকার এসব বিষয়ে কতটা দৃষ্টি দিচ্ছেন, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির আকার অত্যন্ত বিশাল। এটি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে কীভাবে মূল অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। অর্থনীতির অনেক টুলস আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছি না। ২০২২ সালে ব্যাংক বহির্ভূত মুদ্রার পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২৩ সালে এসে এটা হয়েছে ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যাংক বহির্ভূত মুদ্রার পরিমাণ বৃদ্ধির পেছনে মূল্যস্ফীতি অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। কারণ নির্দিষ্ট আয়ের মানুষগুলো এখন সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে তারা ব্যাংকে সঞ্চয় করতে পারছে না।
ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হবার কারণে সাধারণ মানুষ ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারানোর পর্যায়ে রয়েছে। ২০২৪ সালের সর্বশেষ পরিসংখ্যান পাওয়া গেলে আমরা অনুধাবন করতে পারতাম ব্যাংকবহির্ভূত মুদ্রার পরিমাণ কমছে না বাড়ছে। ব্যাংকে অর্থ সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যাওয়া কোনোভাবেই অর্থনীতির জন্য সুখকর নয়। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, মুদ্রা ব্যাংকের বাইরে চলে যাওয়ার অর্থ মানুষ বাড়িতেই অর্থ সঞ্চয় করছে তা নয়। তারা উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলা করার জন্য আগের তুলনায় বেশি অর্থ ব্যয় করছে। ফলে ইচ্ছা থাকলেও তারা ব্যাংকে অর্থ সঞ্চয় করতে পারছেন না। দীর্ঘদিন ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছেন শ্রমজীবী ও নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বল্প আয়ের মানুষগুলো। কারণ তাদের মজুরি বৃদ্ধি হার মূল্যস্ফীতির তুলনায় অনেক কম। ফলে তাদের আর্থিক সামর্থ্য ও ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে দারিদ্র্যের হার বাড়বে, যা অর্থনীতির জন্য মোটেও সুখকর নয়।
বেশকিছু ব্যাংক মারাত্মক সমস্যায় পতিত হয়েছে। তারা আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না, যারা ক্ষুদ্র সঞ্চয়ী, তারা উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধাক্কা সামাল দিতে গিয়ে সঞ্চয়ের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছে, তার কোনোটিই সঠিকভাবে কাজ করছে না। ফলে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের পরিবর্তে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। আমাদের মার্কেট ম্যাকানিজমগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কি না। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি কীভাবে কাজ করছে এগুলো আমাদের ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্রড মানির গ্রোথ ছিল ২০২২ সালে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে এসে হয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। আসলে কি মানুষের টাইম ডিপোজিট বা ডিম্যান্ড ডিপোজিট এগুলো বাড়ছে কি না। এগুলো বাড়তে পারে। কারণ ব্যাংকগুলো আমানত সংকটে থাকার ফলে উচ্চ সুদ দিয়ে আমানত সংগ্রহ করছে। লিকুইডিটি কভারেজ বা এলসিআর ২০১৭ সালের ১০০ বেসিস স্টান্ডার্ড এ ২০২০ সালে দাঁড়ায় ২১১-তে , ২০২১ সালে দাঁড়ায় ২১৩-তে। শ্রীলঙ্কায় এর পরিমাণ ১৪৫।
কভিডের সময় এটা বেড়ে যায়, যার যৌক্তিক কারণ ছিল। কভিডের সময় ১ লাখ কোটি টাকার স্টিমুলাস প্যাকেজ দেয়া হয়, যা সঠিকভাবে কাজ করেনি। উদ্দেশ্য ছিল ব্যাংকগুলো প্রথম বছর যে টাকা প্রদান করবে, তা আদায় করে পুনরায় তা আবারও অন্য ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা বিতরণ করা হবে; কিন্তু এই বিশেষ প্যাকেজ সঠিকভাবে কাজ করেনি। অনেক ক্ষেত্রে প্রথমবার দেয়া টাকা সঠিকভাবে ফেরত আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে এতে সব শ্রেণির ঋণ গ্রহীতার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে যারা এসএমই খাতের উদ্যোক্তা, তারা ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন।
শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা যাবে না। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য টুলসগুলোও ব্যবহার করতে হবে। আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এটা অবশ্যই ভালো একটি প্রচেষ্টা; কিন্তু প্রশ্ন হলো ঢালাওভাবে আমদানি ব্যয় কমাটা অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নাও হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় এবং বিলাসজাত পণ্য আমদানি কমে গেলে সেটা অর্থনীতির জন্য অতটা ক্ষতিকর নয়; কিন্তু একই সময় যদি শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি কমে যায়, সেটা দীর্ঘ মেয়াদে উৎপাদন খাতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক, অক্টোবর মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ১৯ শতাংশের মতো। এর মধ্যে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি কমেছে প্রায় ৪৪ শতাংশ।
তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা এসব দেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলো তা আমাদের বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে তুলনীয় উদাহরণগুলো পর্যালোচনা-পূর্বক আরও দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সর্বোপরি যে কোনো মূল্যেই হোক আমাদের অর্থনীতিতে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি যত দ্রুত সম্ভব নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে।
এ ব্যাপারে সরকারি এবং বেসরকারি খাতকে একযোগে কাজ করতে হবে। সঠিক তথ্য জোগানের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং দরকার। বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশন কাজ করছিল; কিন্তু তা এখন আর সেভাবে কাজ করতে পারছে না। উচ্চ সুদ হার প্রদান করে ব্যবস্যায়ী উদ্যোক্তা বেশি দিন টিকে থাকতে পারবে না অথচ আমাদের অধিক বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি মহলের ঘন ঘন কনসালটেশন বিশেষভাবে জরুরি।
ফেরদৌস আরা বেগম: অর্থনীতিবিদ ও প্রধান নির্বাহী, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)।
অনুলিখন: এম এ খালেক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে